Skip to content
Home » Blog » দুর্নীতি: কিভাবে শুরু, কিভাবে শেষ? পারবে কি সরকার?

দুর্নীতি: কিভাবে শুরু, কিভাবে শেষ? পারবে কি সরকার?

বর্তমান বাংলাদেশে সবচেয়ে আলোচিত সমালোচিত শব্দটি হলো দুর্নীতি।

দুর্নীতি আসলে কি?

দুর্নীতি দার্শনিক, ধর্মতাত্ত্বিক, নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে কোন আদর্শের নৈতিক বা আধ্যাত্মিক অসাধুতা বা বিচ্যুতিকে নির্দেশ করে। বৃহৎ পরিসরে ঘুষ প্রদান, সম্পত্তির আত্মসাৎ এবং সরকারী ও রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করাও দুর্নীতির অন্তর্ভুক্ত। রাজনীতি বিজ্ঞানের অধ্যাপক মরিস লিখেছেন, দূর্নীতি হল ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ব্যবহার।

বাংলাদেশে দুর্নীতি

বাংলাদেশে দুর্নীতি

হল দেশটির একটি চলমান সমস্যা, এছাড়াও দেশটি ২০০৫ সালে ট্রান্সপারেন্সি
ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক প্রকাশিত তালিকায় পৃথিবীর তৎকালীন সবচেয়ে
দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে স্থান লাভ করে।
২০১১ এবং ২০১২ সালে দেশটি তালিকার অবস্থানে যথাক্রমে ১২০ এবং ১৪৪ তম স্থান লাভ করে, যেখানে
কোন দেশ নম্বরের দিক থেকে যত উপরের দিকে যাবে ততই বেশি দুর্নীতিগ্রস্থ
হিসেবে গণ্য হবে।

ভোগবাদী মানসিকতা (দ্রুত নিজের আর্থিক সক্ষমতা পরিবর্তন) এবং অনেক ক্ষেত্রে অভাব (পরিবারের খরচ বহনের তাগিদ) দুর্নীতির পেছনে দায়ী।
তবে বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট (যখন সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারিদের ভাল বেতন, বাড়ি, গাড়ীর সুবিধা রয়েছে) দেখলে বোঝা যায় ভোগবাদী মানসিকতাই এখন দুর্নীতির জন্য
দায়ী। বাংলাদেশে বর্তমানে সব শ্রেণির ব্যাক্তিরাই (অফিস বা অফিসের বাইরে) ঘুষ গ্রহণ করে থাকে। তবে
উচ্চ পর্যায়ের কর্তারা মূলত তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করতে গিয়ে
ঘুষ গ্রহণকে তাদের অভ্যাসে পরিণত করে। মধ্যবিত্তরা ও নিম্নবিত্তরাও তাদের
জীবনযাত্রা মান উন্নয়নে ঘুষ গ্রহণ করে থাকে। দেখা যায় যে প্রতি ক্ষেত্রেই
মানুষ ঘুষ খেয়ে থাকে।

স্বাধীনতার শুরু থেকেই বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রাদূর্ভাব লক্ষ্য করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিভিন্ন সময়ে দেওয়া তার ভাষনে তিনি দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং নিজের আমলাদের কঠোর সমালোচনা করেন যা সরকার প্রধান হিসেবে আর কাউকে করতে দেখা যায়নি। তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করে তা কঠোরভাবে দমন করার শপথও নিয়েছিলেন।

পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান ও এরশাদের শাসনামলে দুর্নীতি থাকলেও তা যথেষ্ট সহনীয় মাত্রায় ছিল। এর পরের দিনগুলোতে দুর্নীতি মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ে। অনিয়ন্ত্রিত এই দুর্নীতি এখন দেশের উন্নয়নের প্রধান অন্তরায় হয়ে দাড়িয়েছে।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করেছে সরকার। এর মাধ্যমে দুর্নীতি সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু দুর্নীতি যেন আজ পাহাড়সম হয়ে দাড়িয়েছে। দুর্নীতিই যেন দুর্নীতি প্রতিরোধে বড় বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে। কে প্রতিরোধ করবে দুর্নীতি? যিনি প্রতিরোধ করবেন তিনি নিজেই যদি দুর্নীতিতে জড়িত থাকেন! দুর্নীতির ব্যাপকতা এমনই সন্দেহ ও প্রশ্নের কারণ হয়ে গেছে আজ।

দুর্নীতি প্রতিরোধ

বিশেষজ্ঞগন বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে সবার আগে প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা। সরকার চাইলেই কেবল দুর্নীতি নির্মূল করা যাবে।
দুর্নীতি প্রতিরোধে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের বেড়াজাল থেকে দেশকে মুক্ত করার জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। এটা নিঃসন্দেহে খুব সহজ কাজ নয়।

Abu Rayhan

Abu Rayhan

Abu Rayhan is a Physicist, industrial consultant, IT expert, web and application designer and developer, social worker and politician in Bangladesh.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *